সন্ধি বিচ্ছেদ PDF Download: নমস্কার পাঠকগণ আমার আজকে বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা সন্ধি বিচ্ছেদ PDF, সন্ধি বিচ্ছেদ পিডিএফ ডাউনলোড, Bangla Sandhi Viched PDF -এর উপর লক্ষ্য রেখে এই PDF টি তৈরী করেছি।
▷ কারক কাকে বলে? কারক ও বিভক্তি মনে রাখার কৌশল
▷ সমাস কাকে বলে? সমাস কত প্রকার ও কি কি?
▷ বাক্য কাকে বলে? বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?
▷ পদ পরিবর্তন তালিকা PDF
সূচিপত্র
সন্ধি বিচ্ছেদ PDF Download
সন্ধি কাকে বলে?
সন্ধি শব্দের অর্থ মিলন। আমরা যখন কথা বলি তখন অনেক সময় পাশাপাশি শব্দের দুটি ধ্বনি অনেক সময় মিলিত হয়ে যায় বা আংশিকভাবে মিলিত হয়। এই মিলনের নামই সন্ধি।
যেমনঃ বিদ্যা + লয় = বিদ্যালয়। এই শব্দটিতে বিদ্যা শব্দের আ ও আলয় শব্দের আ পরস্পর যুক্ত হয়ে একটি ‘আ’ -এ পরিণত হয়েছে ও বিদ্যালয় শব্দটি গঠন করেছে। সুতরাং, আমরা বলতে পারি, পাশাপাশি দুটি শব্দের ধ্বনির মিলনকে সন্ধি বলা হয়।
বাংলা শব্দের সন্ধি
বাংলা শব্দের সন্ধি কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়
- স্বরসন্ধি
- ব্যঞ্জন সন্ধি
১. স্বরসন্ধি: স্বরধ্বনির সাথে স্বরধ্বনি মিলিত হয়ে যে সন্ধি হয় তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমনঃ শতেক
শত + এক = শতেক
অ+এ = এ
এখানে অ লোপ পেয়েছে।
স্বরসন্ধি = স্বরধ্বনি + স্বরধ্বনি
স্বরধ্বনি লোপের কিছু উদাহরণঃ
১. অ+এ = (অ লুপ্ত) শত+ এক = শতেক, বার+এক – বারেক, কত+এক = কতেক।
অ+এ = (এ লুপ্ত) ভাল+এর = ভালর, বড়+এর = বড়র।
২. আ + আ = আ (একটি আ লুপ্ত) শাঁখা + আরি = শাঁখারি, রুপা+আলি = রুপালি, সোনা+আলি = সোনালি।
৩. আ + উক = উ (আ লুপ্ত) মিথ্যা + উক = মিথ্যুক, হিংসা+উক = হিংসুক, নিন্দা+উক = নিন্দুক
২. ব্যঞ্জন সন্ধি: স্বর ও ব্যঞ্জন অথবা ব্যঞ্জন অথবা স্বর মিলিত হয়ে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জন সন্ধি বলে।
ক. প্রথম ধ্বনি অঘোষ এবং পরের ধ্বনি ঘোষ হলে, দুয়ে মিলে ঘোষ ধ্বনির দ্বিত্ব হয়। যেমনঃ তত + দিন = তদ্দিন ইত্যাদি।
খ. র ধ্বনির পরে অন্য্ ব্যঞ্জন ধ্বনি থাকলে র্ লুপ্ত হয়ে পরবর্তী ধ্বনির দ্বিত্ব হয়। যেমনঃ চার + দিন = চাদ্দিন, চার + শ = চাশ্শ, চার + টি = চাট্টি ইত্যাদি।
গ. চ বর্গীয় ধ্বনির আগে যদি ত বর্গীয় ধ্বনি থাকে তাহলে ত বর্গীয় ধ্বনি লোপ হয় এবং চ বর্গীয় ধ্বনির দ্বিত্ব হয়। যেমনঃ নাত + জামাই = নাজ্জামাই, বদ + জাত = বজ্জাত ইত্যাদি।
ঘ. ত্ এর পরে ‘স’ থাকলে উভয়ে মাইল চ্ছ হয়। যেমনঃ উৎ + সন্ন = উচ্ছন্ন, বৎ + সর = বচ্ছর, কুৎ + সিত = কুচ্ছিত ইত্যাদি।
ঙ. চ ও ত এর পরে ‘শ’ থাকলে চ ও ত এর স্থলে শ হয়। যেমনঃ পাঁচ + শ = পাঁশশ, সাত + শ = সাশশ ইত্যাদি।
চ. হসন্ত ধ্বনির সাথে স্বরধ্বনি যুক্ত হলে স্বরের লোপ হয় না। যেমনঃ বোন + আই = বোনাই, চুন + আরি = চুনারি, তিল + এক = তিলক, বার + এক = বারেক, ঘাট + এর = ঘাটের ইত্যাদি।
ছ. প্রথমে স্বরধ্বনি পরে ব্যঞ্জন ধ্বনি থাকলে সন্ধির সময় স্বরধ্বনিটির লোপ হয়। যেমনঃ কাঁচা + কলা = কাঁচকলা, ঘোড়া + দৌড় + ঘোড়দৌড়, নাতি + বৌ = নাতবৌ
সংস্কৃত শব্দের সন্ধি
বাংলা ভাষায় বহু সংস্কৃত শব্দ অবিকৃতভাবে ব্যবহার করা হয়। এসব শব্দের সন্ধি সংস্কৃত ভাষার নিয়মেই থাকে। সংস্কৃত শব্দের সন্ধি -কে সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় –
- স্বরসন্ধি
- ব্যঞ্জন সন্ধি
- বিসর্গ সন্ধি
1. স্বরসন্ধি:
স্বরধ্বনির সঙ্গ স্বরধ্বনির মিলনের নাম স্বর সন্ধি।
[ক] অ-কার কিংবা আ-কারের পর অ-কার কিংবা আ-কার থাকলে উভয়ে মিলে আকার হয়। আ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমনঃ
অ + অ = আ
নর + অধম = নরাধম, হিম + অচল = হিমাচল, হিত + অহিত = হিতাহিত, প্রাণ + অধিক = প্রাণাধিক ইত্যাদি।
অ + আ = আ
হিম + আলয় = হিমালয়, দেব + আলয় = দেবালয়, সিংহ + আসন = সিংহাসন ইত্যাদি।
আ + অ = আ
যথা + অর্থ = যথার্থ, আশা + অতীত = আশাতীত, মহা + অর্ঘ = মহার্ঘ ইত্যাদি।
আ + আ = আ
বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়, কারা + আগার = কারাগার, মহা + আশয় = মহাশয় ইত্যাদি।
[খ] অ-কার কিংবা আ-কারের পর ই-কার কিংবা ঈ-কার থাকলে উভয়ে মিলে এ-কার হয়। এ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন –
অ + ই = এ
শুভ + ইচ্ছা = শুভেচ্ছা, স্ব + ইচ্ছা = স্বেচ্ছা
আ + ই = এ
যথা + ইচ্ছা = যথেচ্ছা
অ + ঈ = এ
পরম + ঈশ = পরমেশ
আ + ঈ = এ
মহা + ঈশ = মহেশ
[গ] অ-কার কিংবা আ-কারের পর উ-কার কিংবা উ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ও-কার হয়। এ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন –
অ + উ = ও
সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়, নীল + উৎপল = নীলোৎপল
আ + উ = ও
যথা + উচিত = যথোচিত, মহা + উৎসব = মহোৎসব
অ + উ = ও
গৃহ + ঊর্ধ্ব = গৃহোর্ধ্ব, গঙ্গা + উর্মি = গঙ্গোর্মি
[ঘ] অ-কার কিংবা আ-কারের পর এ-কার কিংবা ঐ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ঐ-কার হয়। যেমন –
অ + এ = ঐ
জন + এক = জনৈক
অ + ঐ = ঐ
মত + ঐক্য = মতৈক্য
আ + ঐ = ঐ
মহা + ঐশ্বর্য + মহৈশ্বর্য
[ঙ] অ-কার কিংবা আ-কারের পর ও-কার কিংবা ঔ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ঔ-কার হয়। ঔ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন –
অ + ও = ঔ
বন + ঔষধি = মহৌষদি
আ + ও = ঔ
মহা + ঔষধি = মহৌষদি
অ + ঔ = ঔ
পরম + ঔষধ = পরমৌষধ
আ + ঔ = ঔ
মহা + ঔষধ = মহৌষধ
2. ব্যঞ্জন সন্ধি:
ব্যঞ্জনে ও স্বরে, স্বরে ও ব্যঞ্জনে অথবা ব্যঞ্জনে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জন সন্ধি বলে।
[ক] ব্যঞ্জন ধ্বনি + স্বরধ্বনি
পরে স্বরবর্ণ থাকলে পূর্বে অবস্থিত অঘোষ বর্ণ ‘ক, চ, ট, ৎ, প’ যথাক্রমে ঘোষবর্ণ ‘গ, জ, ড (ড়), দ, ব’ তে পরিণত হয়।
ক + অ = গ
দিক + অন্ত = দিগন্ত
ত + অ = দ
কৃৎ + অন্ত = কৃদন্ত
[খ] স্বরধ্বনি + ব্যঞ্জন ধ্বন
স্বরধ্বনির পর অঘোষ মহাপ্রাণ তালব্য ব্যঞ্জন ধ্বনি (ছ) থাকলে উক্ত ব্যঞ্জন ধ্বনিটি ‘চ্ছ’ হয়।
অ + ছ = অচ্ছ
এক + ছত্র = একচ্ছত্র; মুখ + ছবি = মুখচ্ছবি।
আ + ছ = আচ্ছ
কথা + ছলে = কথাচ্ছলে, আ + ছন্ন = আচ্ছন্ন।
ই + ছ = ইচ্ছ
পরি +ছদ = পরিচ্ছদ; পরি + ছেদ = পরিচ্ছেদ।
▷ কারক কাকে বলে? কারক ও বিভক্তি মনে রাখার কৌশল
▷ সমাস কাকে বলে? সমাস কত প্রকার ও কি কি?
▷ বাক্য কাকে বলে? বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?
▷ পদ পরিবর্তন তালিকা PDF
3. বিসর্গ সন্ধি:
পূর্বপদের বিসর্গের সঙ্গে পরপদে ব্যঞ্জন ধ্বনি বা স্বরধ্বনির সন্ধিকেই বলা হয় বিসর্গ সন্ধি। প্রধানত সংস্কৃত শব্দেই ই সন্ধির প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।
বিসর্গ সন্ধি দুই প্রকার (ক) স-জাত বিসর্গ ও (খ) র-জাত বিসর্গ।
[ক] স-জাত বিসর্গ: শব্দের শেষে ‘স’ স্থানে যে বিসর্গ হয় তাই স-জাত বিসর্গ। যেমনঃ আশীস্ = আশীঃ, পুরস্ = পুরঃ, তেজস্ = তেজঃ, জ্যোতিস্ = জ্যোতিঃ।
[খ] র-জাত বিসর্গ: পদের শেষে ‘র’ -এর স্থানে যে বিসর্গ হয় তাকে র-জাত বিসর্গ বলে। যেমন – অন্তর = অন্তঃ, নির্ = নিঃ, পুনর্ = পুনঃ, প্রাতর্ = প্রাতঃ।
[1] চ্ বা ছ পরে থাকলে পূর্ববর্তী বিসর্গের স্থানে ‘শ’ হয়।
শিরঃ + ছেদ = শিরশ্ছেদ।
নিঃ + ছিদ্র = নিশ্ছিদ্র।
নিঃ + চয় = নিশ্চয়।
সদাঃ + ছিন্ন = সদাশ্ছিন্ন।
পুরঃ + চরণ = পুরশ্চরণ।
নিঃ + চল্ = নিশ্চল।
নভঃ + চর্ = নভশ্চর।
দুঃ + চরিত্র = দুশ্চরিত্র।
শিরঃ + চূড়ামণি = শিরশ্চুড়ামণি।
নিঃ + চিন্ত = নিশ্চিন্ত।
দুঃ + ছেদ্য = দুশ্ছেদ্য।
নভঃ + চক্ষু = নভশ্চক্ষু।
নিঃ + চিহ্ন = নিশ্চিহ্ন।
দুঃ + চিন্তা = দুশ্চিন্তা।
মনঃ + চক্ষু = মনশ্চক্ষু।
শিরঃ + চুম্বন = শিরশ্চুম্বন।
[2] অ – কার ভিন্ন অন্য্ স্বরবর্ণে যুক্ত বিসর্গের পর কোনো স্বরবর্ণ, বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চমবর্গ, ক, র, ল, বা, হ, থাকলে বিসর্গ স্থানে ‘র’। র পরের বর্ণে যুক্ত হয় বা পররের ব্যঞ্জনবর্ণের মাথায় “রেফ” হয়ে বসে।
নিঃ + অবধি = নিরবধি।
নিঃ + আনন্দ = নিরানন্দ।
নিঃ + আকার = নিরাকার।
নিঃ + অর্থক = নিরর্থক।
নিঃ + উদ্যম = নিরুদ্যম।
চতুঃ + দিক = চতুর্দিক।
আবিঃ + ভাব = আবির্ভাব।
দুঃ + আত্মা = দুরাত্মা।
দুঃ + অবস্থা = দুরাবস্থা।
দুঃ + জন = দুর্জন।
নিঃ + দ্বন্দ্ব = নির্দ্বন্দ্ব।
নি: + উপমা = নিরুপমা।
নিঃ + আশ্রয় = নিরাশ্রয়।
দুঃ + অভিমান = দুরভিমান।
চতুঃ + ভুজ = চতুর্ভুজ।
দুঃ + যোগ = দুর্যোগ।
[3] ক. খ, পি, ফ -যে কোনো একটি পরপদের প্রথম বর্ণ হলে নিঃ, অধিঃ, বহিঃ, দুঃ, চতুঃ প্রভৃতি শব্দের বিসর্গ স্থানে ‘ষ্’ হয়।
নিঃ + প্রয়োজন = নিষ্প্রয়োজন।
নিঃ + প্রভ = নিষ্প্রভ।
নিঃ + করুণ = নিষ্করুণ।
আবিঃ + কার = আবিষ্কার।
বহিঃ + কৃত = বহিস্কৃত।
নিঃ + কাম = নিষ্কাম।
নিঃ + কৃত = নিষ্কৃত।
দুঃ + প্রাচ্য = দুষ্প্রাচ্য।
চতুঃ + পদ = চতুষ্পদ।
ভ্রাতুঃ + পুত্র = ভ্রাতুষ্পুত্র।
দুঃ + কৃতি = দুষ্কৃতি।
[4] অ-কার কিংবা আ-কার -এর পর বিসর্গ থাকলে এবং পরপদের প্রথম বর্ণ ক, খ, পি, ফ যেকোনো একটি হলে বিসর্গ স্থানে ‘স’ হয়।
তিরঃ + কৃত = তিরস্কৃত।
অয়ঃ + কান্ত = অয়স্কান্ত।
শ্রেয়ঃ + কর = শ্রেয়স্কর।
পুরঃ + কার = পুরস্কার।
তেজঃ + স্ক্রিয়তা = তেজস্ক্রিয়তা।
তিরঃ + করণী = তিরস্করণী।
নমঃ + কার = নমস্কার।
যশঃ + কর = যশস্কর।
[5] বিসর্গের পরে ট, ঠ থাকলে বিসর্গস্থানে ‘ষ’ হয়।
নিঃ + ঠুর = নিষ্ঠুর।
ধনুঃ + টংকার = ধনুষ্টংকার
চতুঃ + টয় = চতুষ্টয়।
[6] বিসর্গের পরে শ, ষ, স থাকলে বিসর্গের কোনো লোপ হয় না। যেমনঃ
দুঃ + শাসন = দুঃশাসন।
মনঃ + সংযম = মনঃসংযম।
দুঃ + শীল = দুঃশীল।
File Name: সন্ধি বিচ্ছেদ PDF
Size: 544 kb
File Location: Google Drive
Download Link: Available